ঝাঁকা মাথায় জীবন করি ফেরীঝাঁকায় এবার মা কে শরণ করি....

'আশ্বিনের শারদ প্রাতে' আলোক মঞ্জির বাজিয়ে , বাংলার বুকে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এটা কেবল একটি পূজা নয়, সাংস্কৃতিক মিলনোৎসব ও বটে! গোটা বাংলা সেজে ওঠে  মেয়ে উমাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য।
দেবী আরাধনায় সিলভার ওক এস্টেট (কালী পার্ক, রাজারহাট মেইন রোড, কলকাতা -৭০০১৩৬) প্রতিবার ই সেজে ওঠে অপরূপ রূপে। 
এবারে আমাদের অষ্টম বর্ষের থিম হলো ঝাঁকা। ঝাঁকা হল বেত বা বাঁশের তৈরি গভীর পাত্র যা জিনিসপত্র বহনের কাজে লাগে। 
এই থিম এর মাধ্যমে আমরা সম্মান জানাই নিরলস পরিশ্রম করে যাওয়া শ্রমিক মজুর দের যাঁরা এক কালে ঝাঁকায় করে বয়ে নিয়ে যেতেন মাল পত্র, ঝাঁকা মুটে। এনারাই হলেন আজকের ডেলিভারি বয়দের আদি পুরুষ।
এই ইতিহাসের কথা মনে রেখেই আমাদের প্যান্ডেল এ আমরা তুলে ধরেছি ঝাঁকা থেকে আজকের ডেলিভারির ইতিবৃত্ত।
আমাদের দুর্গা প্রতিমা হলো মাতৃ আরাধনার কেন্দ্রবিন্দু। এই প্রতিমার রূপদানে আছেন স্বনাধন্য শিল্পী প্রদীপ রুদ্র পাল। 

সিলভার ওক এস্টেট এর পুজোয় সাং্কৃতিক অনুষ্ঠান হলো এখানকার অন্যতম আকর্ষন। আমাদের প্রতিভাবান কচিকাঁচা থেকে শুরু করে বয়ঃজেঠা সকলেই সমান আগ্রহে অংশগ্রহণ করেন এবং নানা রকম শাস্ত্রীয় ও লোক সঙ্গীত এর পসরা মেলে ধরেন। ভাষা, ধর্মের বিভেদ ভুলে আবাসনের সকলেই মেতে ওঠেন নির্ভেজাল আনন্দে। ছোটরা আলপনা দিয়ে, কুলো বা সরা আঁকার মাধ্যমে আমাদের ঐতিহ্য কে জানতে শেখে। খাওয়া দাওয়া, ভেতর ও বাইরের নানা শিল্পী,  একসঙ্গে য়া দেবীর মন্ত্র, সাজগোজ, সিঁদুর খেলা, স্নেহ আলিঙ্গন সবের মধ্যে সিলভার ওক এস্টেট এ ফার্স্ট এইড, সিকিউরিটি এবং সকল সাবধানতা অবলম্বন করা হয়। আমাদের এবারের পুজোর বাজেট ২০ লাখ টাকা। এই পুজোয় অধিবাসী দের এবং বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমরা তাদের সবাইকে আমাদের বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানতে চাই। আশাকরি আগের ৬ বছরের মতোই আগামী বছর গুলোতেও আমরা এই রকম ভালোবাসা পাবো। 

সভ্যতার শৈশব থেকেই মানুষ তার শ্রমকে লাঘব করার জন্য অবিরত আবিষ্কার করে চলেছে। তারই প্রথম ধাপ ছিল  ঝাঁকা। বেত বা বাঁশের তৈরি গভীর পাত্র যা জিনিসপত্র বহনের কাজে লাগে। ঝাঁকা থেকেই ঝাঁকা মুটে, যে ঝাঁকা বহন করে। আজকের ডেলিভারি বয়দের আদিপুরুষ।  

ঝাঁকা শ্রমজীবী মানুষের শ্রমের প্রতীক।  সে বাবুর পেছনে হাটে বাজারে ঘুরতে থাকা ঝাঁকা হোক বা দোকানের পসরা এক  থেকে অন্যে যাওয়া হোক। কাঁসারির পেছনে তৈজসপত্র মাথায় হোক বা ভদ্রলোকের মালপত্র মাথায় করে ট্রেন ধরানো হোক। সবই ঝাঁকার কেরামতি। সময় পাল্টেছে তাই ঝাঁকাও পাল্টাতে পাল্টাতে সভ্যতার হাত ধরে পিঠের ব্যাগে ঢুকে পড়েছে। মানুষ বাজারে যাওয়ার বদলে বাজার  ছুটছে মানুষের বাড়িতে।  এক ছুট্টে ডোর টু ডোর ডেলিভারি। ঝাঁকার রূপ পাল্টেছে। তাকে হাতিয়ার করে মানুষের  জীবন সংগ্রাম পাল্টায়নি।  যে জীবন মা এর থেকে উৎসারিত। মা এর অবদান।তাই এবারের মাতৃ আরাধনায়  মাকে আমরা ঝাঁকায় করে নিয়ে আসবো আমাদের মাতৃমন্ডপে। আমরা মায়ের সন্তান। তার সন্তানেরা, আজকের নতুন ঝাঁকা মুটেরা, পিঠে ব্যাগ আর বাইক চালিয়ে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, জীবনকে বাজি রেখে এক দরজা থেকে অন্য দরজায় ছুটে চলেছে।  তাদের চলমান শ্রমের ইতিহাস ও লেখা থাকুক তাদের মায়ের আরাধনার মন্ডপে।  

Popular posts from this blog

MSME-DFO, Kolkata organized Vendor Development Programme for the MSME Sector at Indian Institute of Packaging, Kolkata

Nephrocare India celebrates its second anniversary by organizing a Walkathon – ‘A walk for your kidney’ and spread awareness for better Kidney care

Karnataka Tourism: A Cultural Odyssey Unveiled at IITM Hyderabad 2023